আশুরার কারবালায় সপরিবারে শহীদ হন বিশ্ব নবীর প্রাণ প্রিয় নাতি ইমাম হুসাইন(আ.)। এই শোক ও স্মৃতিকে স্মরণ করে সারা বিশ্বে পবিত্র আশুরা পালন করা হয়। ৬১ হিজরির ১০ মহরম তথা আশুরার দিনে ইরাকের কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়ার সেনাদের হাতে শহীদ হন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.-এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর সঙ্গীরা।
এছাড়াও কারবালায় আশুরার দিনের বিকালে কয়েক লাখ জিয়ারতকারীদের উপস্থিতিতে "হারুলেহ তুওয়ারিজ" শোকানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই শোকানুষ্ঠানে সকল জিয়ারতকারী এবং ভক্তগণ “লাব্বাইক ইয়া হুসাইন” বলে ইমাম হুসাইন (আ.)'র সঙ্গী হওয়ার অঙ্গীকার করেছেন।
এই মহৎ ও মহাকাব্যিক আচার-অনুষ্ঠানে, আবা আবদুল্লাহ আল-হুসাইন (আ.)-এর প্রতি আনুগত্যের নিদর্শন হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠান ইমাম হুসাইনের (আ.) ভক্তগণ তাঁর পবিত্র মাজারের দিকে পূর্ণ গতিতে ছুটে যায় এবং "ইয়া হুসাইন (আ.)" স্লোগানের মাধ্যমে আবা আবদুল্লাহ আল-হুসাইন (আ.)-এর প্রতি তাদের আনুগত্য পুনর্নবীকরণ করে।
আশুরার দিনে আসরের সময় “রাকদাতু তুওয়ারিজ” নামে পরিচিত এই শোকানুষ্ঠানে “ইয়া হুসাইন” খচিত পতাকা ছাড়াও হাশদ আশ-শাবির পতাকা উত্তোলন করা হয়েছ।
হারুলেহ তাওয়ারিজ কি?
টেলিগ্রাম চ্যানেল "দেলনেশতেহি এক ইরাকি" হারুলেহ তাওয়ারিজ সম্পর্কে লিখেছেন: ইমাম হুসাইনের (আ.) শোকানুষ্ঠানের একটি আচার যা বহু বছর ধরে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে তা হল "রাকদা তুওয়ারিজ" বা হারুলেহ তুওয়ারিজ, যা পবিত্র নগরী কারবালায় আশুরার দিনে আসরের সময় অনুষ্ঠিত হয়।
হারুলেহের উৎপত্তি: ১২৬৩ সালে ইরাকের তুওয়ারেজ শহরে (কারবালা থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত) এবং সাদাত কাজভিনি পরিবারের বাড়িতে ইমাম হুসাইন (আ.)এর শাহাদাতের স্মরণের প্রতি বছরের মতো ঐ বছরেও সাইয়্যেদ সালেহ কাজভিনি মজলিশ পাঠ করা হয়।
মজলিশের শেষে আহলে বাইত (আ.)এর উপস্থিত ভক্তগণ এতটাই অনুপ্রাণিত হয়েছিল যে তারা সাইয়্যেদ কাজভিনিকে অনুরোধ করেছিল যে, তারা যেন ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পবিত্র মাজারে যাবে এবং মাজারে আশুরার দুপুরে শোক পালন করবে।
সাইয়্যেদ সালেহ কাজভিনি ঘোড়ায় চড়ে হারুলেহ কানানের ভূমিকায় তাদের সাথে অংশগ্রহণ করলেন এবং অন্যান্য শোকার্তদের সাথে কারবালা এবং হারুলেহকাননের মাজারের দিকে রওয়ানা হন।
এই ঘটনার ১৪০ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও এই শোকানুষ্ঠানের ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত রয়েছে। শুধুমাত্র সাদ্দামের আমলে এই স্বৈরাচারী শাসকের অত্যাচারের কারণে এই শোকানুষ্ঠান বন্ধ ছিল। অবশ্য বিগত কয়েক বছর যাবত কারবালার ৫ কিলোমিটার অদূরে “কানতারুস সালাম” এলাকা থেকে এই শোকানুষ্ঠান শুরু হচ্ছে। 4077137